হ-বাংলা নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে : পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফে বর্ণিত মহান প্রিয়নবীর মহাপবিত্র শুভাগমন সকল ঈদের সেরা ঈদ -ঈদে নুজুলুন্নবী ১২ই রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে গত ৮ই নভেম্বর রবিবার নিউ ইয়র্কের কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস্থ পালকি পার্টি হলে বাদ মাগরিব থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর উদ্যোগে জশ্নে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মাহফিলের প্রারম্ভে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী ও না’ত শরিফ পাঠ করেন মুহাম্মদ ওমর ফারুক। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুর রহীম মাহমুদের সভাপতিত্বে ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে তকরীর করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতী আনসারুল করিম আজহারী ও বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ হেলাল মাহমুদ, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ওয়াসিম সিদ্দিকী, সহ-সভাপতিবৃন্দ মাওলানা আনোয়ারুল হক কাদেরী, মুহাম্মদ আক্তার হোসেন, কাজী সাইদুর রহমান, যুগ্ন সাধারন সম্পাদকদয় মুহাম্মদ দিদার ও মুহাম্মদ ওমর ফারুক এবং উপদেষ্টাবৃন্দ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, আবু তালেব চান্দু, জয়নাল আবেদীন ও মাহফুজুল বারী প্রমুখ। মাহফিলে বিশিষ্টজনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টাবৃন্দ মুহাম্মদ নাজিম, গিয়াস আহমেদ, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, সাংবাদিক রিমন ইসলাম, সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম ও সাংবাদিক মিজানুর রহমান এবং আরো উপস্থিত ছিলেন নাজের উদ্দীন, হাবিব আহসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসাইন, এরশাদ ওয়ারেস, মাসুদ সিরাজী, মুহাম্মদ সেন্টু, ফয়েজ কবির, আব্দুল হালিম, মুহাম্মদ মালেক, মুহাম্মদ রবিন, খোকন চৌধুরী, এইচ রাসেল ও মনিরুজ্জামান প্রমুখ। মাহফিলের সহযোগিতায় ছিলেন মুহাম্মদ নাদের, শাহজাহান চৌধুরী, মজিবুর রহমান, মুহাম্মদ ইসহাক, মাহবুবুর রহমান, মুহাম্মদ আলী, নাসির আহমেদ, মঈনুদ্দীন নাসের, জালাল আহমদ, নজরুল ইসলাম, মুুমিনুল হক, লাবলু সরকার, রুবেল মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মুস্তাক আহমেদ, শাহ সরফরাজ, দেওয়ান সরকার, রেজাউল হক চৌধুরী, মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন, মুহাম্মদ আলম, আবুল কাশেম, মুহাম্মদ রেজাউল আজাদ ভ‚ইয়া, আবদুল মান্নান, হারুনুর রশীদ, মুহাম্মদ মাহবুব, তাইমুর অরোরা, সানাউল হক, ইবরার আহমেদ, ইসরার আহমেদ, রেজাউল হক, মাহবুব আলম, মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান, মুহাম্মদ কামাল, মামুন মোল্লা, জাহাঙ্গীর মোল্লা সানি, আলাউদ্দীন ফকির, ওহিদুল আলম, নাজমুল হাসান, লুৎফুর রহমান, মাহফুজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, মামুনুর রশীদ ও নাজমুল গনী।
মাহফিলে বিশিষ্ট আলেমবৃন্দ কোরআন সুন্নাহর আলোকে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে এ উপলক্ষকে “ঈদ” হিসেবে পালনের জন্য সকল মুসলিমদেরকে আহŸান জানান। আলেমগণ বলেন মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন শরিফে তাঁর রহমত প্রকাশের উপলক্ষকে খুশীর বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে খুশী উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং মহান আল্লাহ তা’য়ালা মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে উম্মতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ খুশীর উপলক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন। সৃষ্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উপলক্ষ সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে নুজুলুন্নবী (সা.)। মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ আলোচিত এবং উদযাপিত হয়ে আসছে সর্বকালে। সকল নবীগণ তাঁদের বিশিষ্ট উম্মতদের মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের সংবাদ দিয়েছেন এবং অনেক নবীগণ তাঁর শুভাগমনের ঘোষণা দিয়েছেন যা কোরআন শরিফের অসংখ্য আয়াতে বর্ণিত রয়েছে। তাই যারা মহান মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে ঈদ বা খুশী মনে করে না, তারা নিজেরা বিভ্রান্ত ও মূর্খ। আর যারা এই উপলক্ষ পালনকে বিদআত মনে করে ও তা প্রচার করে তারা পথভ্রষ্ট, নবীদ্রোহী ও উগ্রবাদী বাতেল ফেরকা খারেজী ওহাবীবাদের অনুসারী।
মাহফিলে আলেমগন বলেন পবিত্র আহলে বায়াত ও সাহাবায়ে কেরাম মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করেছেন। যাঁরা মহান প্রিয় নবীর শুভাগমন ঈদ বা খুশী হিসেবে উদযাপন করে তারা মূলত প্রিয়নবীকে পেয়ে খুশী, প্রিয়নবীর উম্মত হওয়ার জন্য খুশী এবং প্রিয়নবীকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসার কারণে খুশী। এই পৃথিবীতে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনের খুশী বা আনন্দের উপলক্ষ সকল ঈমানদারগণ সর্বযুগে পারিবারিক সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদযাপন করেছেন। বিশেষ করে ইসলামী সন গণনার জন্য অন্যতম নির্নায়ক হিসেবে মহান প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমনকে অসংখ্য সাহাবাগণ প্রস্তাব করেন, যদিও প্রিয়নবীর প্রেমের আরেকটি উপলক্ষ পবিত্র হিজরতুন্নবী সাল গণনার জন্য প্রাধান্য পায়। হিজরতের স্মরণ ও নবীপ্রেমে নবীর শুভাগমনের ঈদ বা খুশী একাকার ও হিজরত প্রিয়নবীর পবিত্র শুভাগমন ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দের অংশমাত্র। অতএব ইসলামের ইতিহাসের সর্বকালে সকল দেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দ উদযাপিত হয়ে আসছে এবং অনন্তকাল তা হতে থাকবে।
মাহফিলে বক্তাগণ রাষ্ট্রীয়ভাবে সকল সরকারী প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সকল দূতাবাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী বাধ্যতামূলক পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নিকট সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানান। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ইউএসএর পক্ষ থেকে সবাইকে নবীপ্রেমে ইসলামের প্রকৃত ধারা আহলে সুন্নাতের পতাকায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত মুক্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সালাতু সালাম, কিয়াম, বিশেষ মুনাজাত ও তবারুক বিতরণের মাধ্যমে জশ্নে ঈদে নুজুলুন্নবী (সা.) তথা জশ্নে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল সমাপ্ত হয়।