হ-বাংলা নিউজ : ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে ‘তন্ত্র-মন্ত্রে’ বিশ্বাসী ‘উচ্চশিক্ষিত’ মা বাবার হাতে প্রাণ গেল দুই মেয়ের। রোববার (২৪ জানুয়ারি) মদনাপাল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, লাল শাড়িতে পেঁচানো রক্তাক্ত মৃতদেহের সামনে নাচ-গান করছেন তার বাবা-মা। এমন ঘটনায় রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নিহতদের বাবা ডা. ভি পুরুষোত্তম নাইডুকে এক নম্বর ও মা পদ্মজাকে দ্বিতীয় আসামি হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার বরাতে জানা যায়, গ্রেফতারের পর থেকেই অসংলগ্ন আচরণ করছেন এই দুইজন। পদ্মজা চিৎকার করে বলতে থাকেন, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি চীনে নয় বরং দেবতারা ‘খারাপ জিনিস’ দূর করার জন্য কলিযুগে এই ভাইরাস পাঠিয়েছেন। কোভিড-১৯ টেস্ট করতেও অস্বীকৃতি জানান এই নারী। পদ্মজা বলেন, মানুষের চরিত্রে তিনি নিজেই ‘করোনা ভাইরাস’ এবং এর জন্য কোন টেস্টের দরকার নেই।
এই দম্পতি তাদের দুই কন্যাকে নির্মমভাবে হত্যার পর নিজেরাও আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে জানায় পুলিশ। নিহত কন্যারা হলেন- আলেখ্য (২৭) এবং সাই দিব্য (২২)। তারা করোনা লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি হওয়ায় বাড়িতে আসে। এদিকে তাদের মরদেহ উদ্ধারের জায়গাটি পর্যবেক্ষণে পুলিশের ধারণা, হত্যার আগে পরিবারটি একটি উপাসনায় অংশ নিয়েছিল।
নিহত দুই তরুণির বাবা মা দুজনেই উচ্চশিক্ষিত। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, নাইড়ু মদনাপালে সরকারি বালিকা ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং উপ-অধ্যক্ষ। আর পদ্মজা আইআইটির কোচিং ইনস্টিটিউটে কর্মরত ছিলেন। তবে তারা দুজনই অন্ধবিশ্বাসে জর্জরিত ছিলেন। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির বরাতে জানা যায়, এই দুজন ভেবেছিলেন মেয়েদের উপর ‘অশুভ আত্মা’ ভর করেছিল। একারণেই মৃত্যুর পর মরদেহের সামনে নাচ গান করছিলেন তারা।
ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে পুলিশ গণমাধ্যমকে আরও জানায়, অপরাধের জায়গা দেখে মনে হয়েছে সেখানে কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছিল। মৃত দুই মেয়ের লাশ লাল শাড়িতে মোড়ানো ছিল। তাদের দুইজনের মাথায় ছিল গভীর ক্ষত। কোন মুগুর দিয়ে তাদের আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
ঘটনার চার দিন আগে থেকেই সকল বাড়ির কর্মচারীদের বিদায় করা হয়। চিতোরের পুলিশ প্রধান সেনথিল কুমার জানান, নাইডু ও পদ্মজা দুজনই আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেসময় পুলিশ উপস্থিত হওয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।
তথ্যঃ সংগ্রহীত