হ-বাংলা নিউজ : নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের হোমকেয়ার প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ। এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রিকোয়েস্ট ফর অফার (আরএফও) তালিকাভুক্ত না হলে ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে নিউইয়র্ক রাজ্যের ৪২টি প্রতিষ্ঠান আরএফও তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। একটি হচ্ছে এমঅ্যান্ডএন হোমকেয়ার, অন্যটির নাম জানা যায়নি। অন্যান্য হোমকেয়ার প্রতিষ্ঠানও তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আরএফও তালিকায় হোমকেয়ারগুলো স্থান পেয়েছেন কিনা, জানা যায়নি। অবশ্য হোমকেয়ারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যথাযথ নিরীক্ষা প্রক্রিয়া শেষ করতে কিছুটা সময় লাগছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।
যেসব হোমকেয়ার প্রতিষ্ঠান তালিকায় স্থান পায়নি, তাদেরকে তালিকাভুক্ত হোমকেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ (ডিওএইচ)। আর যারা আরএফও অনুমতি পাবে, তারাই শুধু কনজ্যুমার ডাইরেক্ট পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামের (সিডিপিএপি) জন্য অনুমতি পাবে। আর যারা অনুমতি পাবে না, তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
হোমকেয়ার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ডিওএইচের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রত্যেক হোমকেয়ার মালিকের জন্য আরএফও তালিকাভুক্তি থাকতে হবে। এই তালিকাভুক্তির জন্য ডিওএইচ থেকে সব হোমকেয়ারের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়। সব হোমকেয়ার কয়েকটি গ্রুপে এবং ব্যক্তিগতভাবে কাগজপত্র জমা দেয়। এরপরই ৪২টি হোমকেয়ারের তালিকা প্রকাশ করে ডিওএইচ।
আরএফও তালিকাভুক্ত এমঅ্যান্ডএন হোমকেয়ারের ব্যবসা উন্নয়ন পরিচালক আলতাফ হোসেন বলেন, আরএফও অনুমোদন পাওয়া আমাদের হোমকেয়ার ব্যবসার জন্য একটি বড় সাফল্য। আর অনুমতি না পাওয়া হোমকেয়ারগুলো ঝুঁকিতে আছে। তিনি বলেন, ‘কোনো হোমকেয়ার মালিক আমাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে আমরা তাদের অবশ্যই সহযোগিতা করব।’
আরএফও অনুমোদন প্রসঙ্গে মার্কস হোমকেয়ার কর্মকর্তা আলমাস আলী বলেন, রাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি আমাদের নজরে এসেছে। ছোট ছোট কিছু কোম্পানির নাম উল্লেখ আছে। বড় বড় কোম্পানিগুলোর অডিট চলছে। যেহেতু আমরা বড় কোম্পানি, তাই একটু সময় বেশি লাগছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবাই অনুমোদন পাবে। এতে কোম্পানি বা গ্রাহকের ভয়ের কিছু নেই।
ইমিগ্রান্ট এলডার কেয়ারের সিইও গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘সিডিপ্যাপ বন্ধ হচ্ছে না। দু-একটি হোমকেয়ার ষড়যন্ত্র করে অন্যান্য হোমকেয়ারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা সমন্বিত ও ব্যক্তিগতভাবে আরএফওর জন্য আবেদন করেছি। ব্যক্তিগতভাবে আরএফও অনুমোদন না হলেও সমষ্টিগতভাবে ৫ কোম্পানি অনুমোদিত হয়েছে। আমরা যে কারও সঙ্গে অনায়াসে কাজ করতে পারি। ফলে হোমকেয়ার বা গ্রাহকদের ভয়ের কোনো কারণ নেই।’
বারি হোমকেয়ারের সিইও আসেফ বারি বলেন, নিউইয়র্কে হোমকেয়ার এজেন্সির সংখ্যা সাত শতাধিক। তার মধ্যে মাত্র ৪২টির নাম এসেছে। বাকি কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। আমরা ডিওএইচের চাহিদা অনুযায়ী সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। এতে কারও বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। প্রয়োজনে অরডিনান্স ৭৬ ধারায় আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা হোমকেয়ার সেবা পাচ্ছেন, তাদের সেবাও অব্যাহত থাকবে।
এদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, ডিপার্টমেন্ট অব হেলথের (ডিওএইচ) সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খ্যাতনামা কয়েকটি হোমকেয়ার প্রতিষ্ঠান একযোগে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতিমধ্যে তারা নিউইয়র্কের ল’ ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্যদিকে সাউথ এশিয়ান হোমকেয়ার ওনার অ্যাসোসিয়েশন সিডিপ্যাপ বন্ধে হচ্ছে বলে গুজব সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে ও গ্রাহকদের ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সব হোমকেয়ার মালিক ১৬ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসেছিলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইমিগ্রান্ট এলডার হোমকেয়ারের সিইও গিয়াস আহমেদ, বারী হোমকেয়ারের সিইও আসেফ বারী ও মুনমুন বারী, ডিএইচ কেয়ারের সিইও শাহরিয়ার, গোল্ডেন এজ হোমকেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, দাদা হোমকেয়ারের সিইও সাঈদ হায়াত, বেঙ্গল হোম কেয়ারের সিইও জামিল মাহমুদ, বাংলা হোমকেয়ারের সিইও আবু জাফর মাহমুদ, ডাইরেক্ট সোর্স হোমকেয়ারের সিইও নাজিম উদ্দিন, সারা হোমকেয়ারের সিইও ডা. শাহজাদী পারভীন ও স্বপ্ন হোমকেয়ারের সিইও মিজবাহ আবেদিন।
তথ্যঃ সংগ্রহীত