হ-বাংলা নিউজ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে সুনামির মতো অভিবাসীদের প্রবেশ ঘটছে। বাইডেন সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেওয়ায় প্রতি মিনিটে দেশের পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।
ট্রাম্প বলেছেন, যার এ দেশে থাকার কথা নয়, তাদের কারণেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান রক্ষা ও দেশের আইন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়ে শপথ ভঙ্গ করেছেন।
৫ মার্চ ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অভিবাসন নীতির এমন সমালোচনা করে একটি দীর্ঘ বিবৃতি দিয়েছেন। মাত্র দেড় মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড নিয়ে এমন কঠোর সমালোচনা করলেন।
নির্বাচনে পরাজয় না মানা ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা নাটকীয়তার পর হোয়াইট হাউস থেকে চলে গিয়ে এখন ফ্লোরিডায় অবস্থান করছেন। এর মধ্যেই তিনি রাজনীতিতে আবারও সোচ্চার হয়ে উঠছেন। গত সপ্তাহে রক্ষণশীলদের সমাবেশে মঞ্চ গরম করা বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নামে তাঁর শুরু করা আন্দোলন ব্যাপকভাবে চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতা আসার পরই মার্কিন অভিবাসন নিয়ে সংস্কার আনার চেষ্টা করছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় অভিবাসনব্যবস্থায় আরোপিত কড়াকড়ি সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন বাইডেন। তিনি সীমান্ত দিয়ে আসা অভিবাসীদের আশ্রয় আবেদন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তর থেকে করার বিধি পুনর্বহাল করেছেন। পরিবারের সঙ্গে আসা শিশুদের মা-বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন না করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বাইডেন প্রশাসন থেকে। দেশ থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের বিতাড়ন প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন। প্রায় দুই কোটি নথিপত্রহীন অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে কংগ্রেসকে দ্রুততার সঙ্গে আইন প্রণয়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল অভিবাসন বিরোধীদের চাঙা রাখতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ৫ মার্চ দেওয়া ওই বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন। মার্কিন সমাজে স্পর্শকাতর বিষয়কে অস্ত্র হিসেবে নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প তাঁর দীর্ঘ বিবৃতিতে বলেছেন, অভিবাসন আইন লঙ্ঘনকারীদের দমনে আইনের প্রয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত রক্ষী, অভিবাসন প্যাট্রল কর্মকর্তাসহ অভিবাসন আইনের প্রয়োগে নিয়োজিত লোকজনের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেছেন, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হবে। তিনি নিজে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় অভিবাসনব্যবস্থায় ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি শৃঙ্খলা নিয়ে এসেছিলেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন।

ট্রাম্প সীমান্ত পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। না হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ‘অবৈধ অভিবাসন’, ‘অপরাধী’ ও ‘চায়না ভাইরাস’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে মুক্ত রাখার জন্য ট্রাম্প তাঁর বিবৃতিতে বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন বিবৃতির জবাব দেওয়া হয়েছে হোয়াইট হাউস থেকে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, অভিবাসন নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে পরামর্শ বা উপদেশ নেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। অভিবাসন বিষয়ে গত চার বছর ট্রাম্পের নীতি অকার্যকর এবং অমানবিক ছিল বলে জেন সাকি উল্লেখ করেন।
প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, বাইডেন প্রশাসন একটি মানবিক অভিবাসনব্যবস্থা গড়ে তুলবে। সীমান্ত দিয়ে আসা শিশুদের প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হবে। শিশুদের নিরাপত্তা জন্যই এসব করা হবে।
বাইডেন প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের সময়ে আগ্রাসী এবং অমানবিক অভিবাসন পরিস্থিতির অবসান ঘটানো হবে। সুশৃঙ্খল ও মানবিক অভিবাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান আলেজান্দ্রো মায়োর্কাস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হিসেবে না আসার জন্য কাউকে বলা হচ্ছে না। নিয়ম মেনে, নিরাপদ ব্যবস্থায় দ্রুততার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
তথ্যঃ সংগ্রহীত